শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫০ অপরাহ্ন
দক্ষিনাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধনের লক্ষে ফোরলেন করা হচ্ছে মহাসড়ক। ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়ক ফোরলেনে উন্নীত করার লক্ষ্যে নানান পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সড়ক বিভাগ। তবে এ ফোরলেনকে ঘিরে বর্তমান ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক ক্ষ্যাত বরিশাল নগরের সিএ্ন্ডবি রোডের দুইপাশের বেশকিছু বাসিন্দারা পরেছেন বিপাকে। তাদের দাবি,জমি অধিগ্রহনের ফলে ভাঙ্গা পড়তে পারে তাদের বসতি ঘর, বহুতল ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই তারা বরিশাল নগরের সিএন্ডবি রোডের দুই পাশের বাসিন্দাদের সম্পদের ক্ষতি না করে বাইপাস (গড়িয়ারপাড়-কুদঘাটা-কালিজিরা) হয়ে ফোরলেন নির্মানের দাবী জানিয়েছেন। এরইমধ্যে এ দাবিকে ঘিরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বরিশাল শহর বাইপাস মহাসড়ক উন্নয়ন বাস্তবায়ন কমিটির নামে সংগঠনের নেতারা। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশীল কুমার সাহার কাছে দেয়া স্মারকলিপি সূত্রে জানাগেছে, ভাঙ্গা-কুয়াকাটা ফোরলেনের কারনে নগরের প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপাড় থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত সিএন্ডবি রোডের দুই পাশের কয়েশত বহুতল ভবন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, সরকারী শিশু সদন, সড়ক বিভাগ কার্যালয়, বিএডিসি, টিটিসি, মৎস্য ভবন সহ একাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বরিশাল শহর বাইপাস মহাসড়ক উন্নয়ন বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোক্তা মো. আবু জাফর, জাকির হোসেন সুলতান ও মো. মুকিবুর রহমান মুকিব জানান, ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের বরিশাল নগরের অংশের প্রায় ১১ কিলোমিটার সিএন্ডবি মহাসড়কে (গড়িয়ারপাড়-দপদপিয়া) ভাড়ি যানবাহনের প্রচুর চাপ। এছাড়া হাজার হাজার হালকা যানবাহনের কারনে সিএন্ডবি রোডের দুই পাশের মানুষ সঠিকভাবে রাস্তা পারপার হতে পারে না। ঝূঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ে হতাহত হন বরিশালের মানুষ। এ অবস্থায় বরিশালের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে, প্রস্তাবিত ফোরলেনটি নগরের বর্তমান সিএন্ডবি রোড না হয়ে মূল শহরের এক পাশ দিয়ে গড়িয়ারপাড়-কুদঘাটা-কালীজিরা হয়ে দপদপিয়া পর্যন্ত নির্মানের। ফলে এটি নগরের বাইপাস সড়ক হয়ে যাবে এবং নগরের ভেতরের সিনএন্ডবি রোডের যানবাহনের চাপ কমে যাবে। পাশাপাশি বাইপাস হয়ে ফোরলেন নির্মিত হলে সড়ক বিভাগের কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষযে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুশীল কুমার সাহা জানান, বিষয়টি আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। এরপর এ বিষয়ে চুড়ান্তভাবে কোন কিছু জানানো যাবে। অপরদিকে সহায় সম্ভল রক্ষায় সিটি মেয়র সেরনিয়াবাদত সাদিক আবদুল্লাহর সাথে সাক্ষাত করেছেন ফোর লেনের সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থরা। গত বৃহস্পতিবার সিটি মেয়রের বাস ভবনে সিএন্ডবি রোডের ক্ষতিগ্রস্থরা যান এবং মেয়রকে এ বিষয়ে অবহিত করেন। পরে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ জনগনের সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য বাইপাস হয়ে ফোরলেন বাস্তবায়নের বিষয়টি নিয়ে সড়ক বিভাগের সাথে কথা বলবেন বলে জানান। যাতে করে সাধারন মানুষের সম্পদ ক্ষতি না করে বিকল্প ব্যাবস্থার মাধ্যমে উন্নয়ন করা হয়। সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ভাঙ্গা থেকে-কুয়াকাটা পর্যন্ত ২৩৬.৭৪ কিলোমিটার ফোরলেন নির্মানে বর্তমান সিএন্ডবি রোডের (মহাসড়ক) দুই পাশে ২০ ফুট করে মোট ৩০২.৭০ একর জমি অধিগ্রহন করবে সরকার। গত জুন মাসে জমি অধিগ্রহনের প্রশাসনিক অনুমোদন হয়ে গেছে। জমি অধিগ্রহনে ১ হাজার ৮শ’ ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রাক্কলন তৈরি হয়েছে। প্রথম দফায় জমি অধিগ্রহনের জন্য ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এখন সড়ক বিভাগ থেকে সংশ্লিস্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জমি অধিগ্রহনের প্রস্তাব পাঠানো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।